Your cart is currently empty!
দুগ্ধ খামার স্থাপনে করণীয়

দুগ্ধ খামার স্থাপন বর্তমান সময়ের একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। অধীক উৎপাদনশীল গাভী গরু পালনের মাধ্যমে কম খরচে দুধ ও বাছুর উৎপাদন করা সম্ভব হয়। দুগ্ধ খামার স্থাপনে করনীয় ও বিবেচ্য দিক নিম্নে তুলেধরা হলো।
অধীক উৎপাদনশীল গাভী নির্বাচন
দুগ্ধ খামার এর জন্য অধীক উৎপাদনশীল গাভী নির্বাচণে নিচের বিষয়সমূহ বিবেচনা করতে হবে।
- মায়ের দুধ উৎপাদনের ইতিহাস ভলো হতে হবে।
- গাভীর ওলান আকারে বড় ও দুধের শিরাগুলো মোটা হতে হবে।
- গায়ের চামরা মসৃণ, পাতলা ও ঢিলেঢালা হতে হবে।
- গাভীর গায়ের হাড় মোটা কিন্তু বেশি মাংস থাকা চলবে না।
- পাঁজরের হাড়গুলো সুস্পষ্ট দেখা যাবে।
বাংলাদেশে পালিত দুধেল গাভীর জাত
দুগ্ধ খামার এর জন্য হলস্টিয়ান-ফ্রিজিয়ান, জার্সি, লাল সিন্ধি, শাহিওয়াল, চট্টগ্রামের লাল গরু, পাবনা ভ্যারাইটি ইত্যাদি বাংলাদেশে দুধ উৎপাদনে পালন করা হয়। নিচে একটি টেবিলের সাহায্যে দুধ উৎপাদন ক্ষমতা ও ওজন তুলেধরা হলো।
গাভী গরুর জাত | দৈহিক ওজন | দুধ উৎপাদন/দিন |
হলস্টিয়ান-ফ্রিজিয়ান | ৫০০-৬০০ কেজি | ২০-২৫ লিটার |
জার্সি | ৩৫০-৫০০ কেজি | ৮-১৬ লিটার |
লাল সিন্ধি | ৩০০-৩৫০ কেজি | ৬-১৮ লিটার |
শাহিওয়াল | ২৭২-৪০৯ কেজি | ৭-১৫ লিটার |
রেড চিটাগং | ২২৫-২৫০ কেজি | ১০-১২ লিটার |
পাবনা ভ্যারাইটি | ১৫০-২০০ কেজি | ৬-১০ লিটার |
গাভী গরুর বাসস্থান ব্যস্থাপণা
দুগ্ধ খামারে গাভী গরুর ব্যবস্থাপনা হতে হবে আধুনিক ও বিজ্ঞান সম্মত।
- ভূমি থেকে উঁচু ও শুষ্ক স্থানে খামার স্থাপন করতে হবে।
- পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবসাথা থাকতে হবে।
- পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস চলাচলেনর ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- গাভী পালনের ঘর পূর্ব-পশ্চিম লম্বা হওয়া ভালো। এতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচল করতে পারে।
গাভী গরুর ঘরের মাপ
গোয়াল ঘরের ধরন | দাঁড়ানোর জায়গা | খাবার পাত্র | পয়নিষ্কাশন নালা |
এক সারি বিশিষ্ট গোয়াল ঘর | দৈর্ঘ্য- ৫.৫ ফুট প্রস্থ- ৩.৫ ফুট | ২ ফিট | ১ ফুট চওড়া |
দুই সারিবিশিষ্ট (মুখোমুখি) | দৈর্ঘ্য- ৫.৫ ফুট প্রস্থ- ৩.৫ ফুট | ২ ফিট | দুই সারির মাঝে ৪ ফিট |
দুই সারিবিশিষ্ট (বিপরীত মুখি) | দৈর্ঘ্য- ৫.৫ ফুট প্রস্থ- ৩.৫ ফুট | ২ ফিট | দুই সারির মাঝে ৮ ফিট |
গাভী গরুর খাদ্য ব্যবস্থাপনা
গবাদিপশু পালনে মোট খরচের সিংহভাগই খাদ্য ও পুষ্টির সাথে জড়িত। সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনাখাদ্যের অপচয় রোধকরে ও খরচ কমায়। তাই লাভজনক খামার প্রতিষ্ঠার জন্য গাভীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা হতে হবে যথাযথ। গাভী গরুর খাদ্যে চাহিদা অনুযায়ী প্রোটিন, ফ্যাট, ফাইবার, শক্তি ও ভিটামিন-মিনারেল থাকা প্রয়োজন। গাভীকে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ ও টাটকা পানি পান করাতে হবে।
গাভী গরুর খাদ্য তৈরির ফরমুলা
ফরমুলা- ১
খাদ্য তৈরির উপাদান | পরিমান |
চাবউলের খুদ | ২০ কেজি |
গমের ভূসি | ১৫ কেজি |
চাউলের কুড়া | ১৮ কেজি |
মসুর ডালের ভূসি | ২৪ কেজি |
তিলের খৈল | ১৫ কেজি |
শুটকি মাছের গুড়া | ৫ কেজি |
খাদ্য লবন | ০.৫ কেজি |
ঝিনুক গুড়া/লাইমস্টেন | ২ কেজি |
ভিটামিন-মিনারেল প্রিমিক্স | ০.৫ কেজি |
ফর্মুরা- ২
খাদ্য তৈরির উপাদান | পরিমান |
ভুট্টা ভাঙ্গা | ১৫ কেজি |
গমের ভূসি | ২৩ কেজি |
চাউলের কুড়া | ৩০ কেজি |
খেসারি ডালের ভুসি | ১০ কেজি |
সরিষার খৈল | ১৪ কেজি |
শুটকি মাছের গুড়া/ ফিস মিল | ৫ কেজি |
খাবার লবন | ০.৫ কেজি |
লাইমস্টোন | ২ কেজি |
ভিটামিন-মিনারেল | ০.৫ কেজি |
গাভীর দৈহিক ওজনের ১% হারে দানাদার খাদ্য দিতে হবে। দুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রথম ১ লিটার দুধের জন্য ১ কেজি দানাদার খাদ্য ও পরবর্তি প্রতি ২.৫ কেজি দুধের জন্য ১ কেজি হারে দানাদার খাদ্য গাভীকে দিতে হবে। এছাড়াও প্রতিটি গাভীকে ১০-১৫ কেজি কাঁচা ঘাস ও ৩-৪ কেজি শুষ্ক খড় খাওয়াতে হবে।
Leave a Reply