Your cart is currently empty!
ছাগলের পিপিআর রোগ ও চিকিৎসা।

ছাগলের পিপিআর রোগ ও চিকিৎসা। পিপিআর হচ্ছে ছাগলের একটি মারাত্বক ও প্রাণঘাতী রোগ। নামক ভাইরাসের কারণে এ রোগ হয়। এ রোগ হলে অসুস্থ ছাগলের জ্বর, মুখে ঘা, পাতলা পায়খানা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি দেখা যায়।
অনেক সময় অসুস্থ ছাগিটি মারাও যেতে পারে। আমাদের দেশে সাধারণত শীতকালে ছাগলের পিপিআর রোগের রোগ রেশি হতে দেখা যায়। এরোগে মৃত্যুর হার খুব বেশি। এ রোগটি গবাদিপশু সহ কিছু কিছু বন্যপ্রাণীতে হতে পারে।
তবে পিপিআর রোগটি সচরাচর দেখা যায় ছাগল এবং ভেড়াতে ছাগলের পিপিআর রোগের চিকিৎসা ব্যায় যেমন বেড়ে যায় তেমনি উৎপাদন ব্যাপক কমে যায়।
শনাক্ত ও নামকরণ
আইভরিকোস্টে ১৯৪২ সালে পেন্ট ডেস পেটিটস রুমিল্যান্টস (পি.পি.আর) বা গোট গ্লেগ রোগটি প্রথম দেখা যায়। তখন এ রোগকে
কাটা (318) বলা হতো। ১৯৮৭ সালে আরব আমিরাতের একটি চিড়িয়াখানার প্রাণী আক্রান্ত সনাক্ত হয়। এটিই প্রথম ছাগল বা ভেড়া ছাড়াও অন্য প্রাণীতে আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড।
এ চিড়িয়াখানায় গজলা হরিণ, বুনো ছাগল ও গেমস বকের দেহে এ রোগ শনাক্ত হয়। ২০০৭ সালে চীনে সর্বপ্রথম এ রোগ সম্পর্কে রিপোর্ট করা হয়। ২০০৮ সালে মরোস্কোতে পি.পি.আর রোগ প্রথম শনাক্ত ও নামকরণ করা হয়।
রোগ পরিচিতি
রোগের নাম ছাগলের পিপিআর রোগ des Petits Ruminants (PPR)
রোগের কারণ
ছাগলের পিপিআর রোগ মরবিলি ভাইরাস (Morbilvirus)। এটি ছাগল ও ভেড়ার মারাত্বক ভাইরাস জনিত রোগ। মরবিলি ভাইরাস (Morbillivirus) দ্বারা সংক্রমণের কারণে এই রোগ হয়। দেহের বাইরে এ রোগের জীবাণু বেশিক্ষণ বেচে থাকতে পারে না। এই রোগ খুবই ছোয়াছে ও মৃত্যুর ঝুকি বেশি। অলপ 08 ছাগল ও ভেড়ার মৃত্যুর হার বেশি হলেও ছাগল সঠিক চিকিৎসায় ভালো হয়।
ছাগলের পিপিআর রোগের লক্ষণ
ছাগলের পিপিআর রোগের লক্ষণ সংক্রমণের কয়েকদিন পর থেকে প্রকাশ পায়। অনেক সময় ছাগলের সাধারণ ডাইরিয়া হলে আমরা
পিপিআর ভেবে নেই। এতে চিকিৎসা খরচ বাড়ে। তাই ছাগলের পিপিআর রোগের লক্ষণ সমূহ সকল ছাগল পালন খামারির জানা থাকা
দরকার।
- শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায়। ছাগলের শরীরের তাপমাত্রা ১০৫-১০৭ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে দেখা যায়।
- ছাগলের নাক, মুখ, চোখ দিয়ে প্রথমে পাতলা তরল পদার্থ বের হয়। পরবর্তীতে তা ঘন ও হলুদ বর্ণ ধারণ করে। ca ধীরে তা আরো
শুকিয়ে নাকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। এতে শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি হয়। - অসুস্থ ছাগলের চোখও আক্রান্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ছাগলের চোখের পাতা ফুলে যেতে পারে। অনেক সময় ঘন দানার মত পদার্থ
জে জজ ক নন! - মুখের ভেতরের নরম টিস্যু গুলো আক্রান্ত হতে পারে। দাঁতের গোড়ার মাংশ পেশিতে of হতে দেখা যায়। দাঁতের মাঝের ফাঁকে, মুখের
ভেতরের তালুতে, ঠোঁটে, ক্ষত বা ঘাঁতেরি হয়। - অনেক সময় অসুস্থ ছাগলের মধ্যে মারাত্বক ডাইরিয়া দেখা দিতে পারে। ডাইরিয়ার ফলে প্রচুর পরিমান তরল পদার্থ শরীর থেকে বের
হয়ে যায়। এতে আক্রান্ত ছাগল প্রচন্ড পানি শুন্যতায় ভোগে। পানি কারণেও অনেক সময় ছাগল মারা যায়। - ছাগলের পিপিআর রোগে আক্রান্ত হলে ওজন কমে যায়। ধীরে ধীরে ছাগল শুকিয়ে যেতে থাকে।
- জীবাণু দ্বারা সংক্রমণের কয়েক দিনের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
- আক্রান্ত ছাগলটি গর্ভবতী হলে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
রোগ সংক্রমণের মাধ্যম
- আক্রান্ত ছাগলের চোখ, নাক, মুখ থেকে নিঃসৃত তরল পদার্থ ও পায়খানার মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়।
- আক্রান্ত ছাগলের শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সুস্থ প্রাণী আক্রান্ত হতে পারে।
- আক্রান্ত ছাগলের হাঁচি-কাশির মাধ্যমেও এ ভাইরাস সুস্থ প্রাণীকে আক্রান্ত করতে পারে।
ভাইরাস পানি, খাদ্য পাত্র এবং অসুস্থ প্রাণীর ব্যবহৃত আসবাবপত্র দিয়েও এ রোগ ছড়াতে পারে। - যেসকল ছাগলের শরীরে জীবাণু আছে কিন্তু এখনও রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়নি সেসব ছাগলের মাধ্যমে রোগ এক জায়গা থেকে
আরেক আগ সুলচ্ য়েথকে।
ছাগলের পিপিআর রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি
এটি ভাইরাল রোগ তাই নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। তবে ওঁষধ প্রয়োগ করে ২য় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমন রোধ করে মৃত্য হার কমিয়ে আনা যায়। আক্রান্ত ছাগল বা ভেড়ার দ্বিতীয় পর্যায়ের জীবাণু সংক্রমণ রোধে এন্টিবায়টিক দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।
জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওঁষধ সেবন করাতে হবে। ডিহাইড্রেশনের জন্য মুখে স্যালাইন খাওয়াতে হবে অথবা শীরায় ডেক্সট্রোজ স্যালাইন দিতে হবে। ছাগলের পিপিআর রোগের চিকিৎসায় ডাইরিয়া বন্ধ করার জন্য আ্যাস্টিনজেন্ট মিকচার দিনে ২-৩ বার খাওয়াতে হবে।
- এন্টিবায়টিক ওঁষধ:ট্রাইভে্ট ভেট,ট্রাইজন ভেট, এসিসেফ-৩ প্রভৃতি
- জ্বর ও ব্যথানাশক ওঁষধ:টাফনিল ভেট, কিটো এ ভেট, ফাস্ট ভেট প্রভৃতি
- স্যালাইন: ইলেক্টরোমিন, রেনালাইট প্রভৃতি
রোগ প্রতিরোধ
ছাগলের পিপিআর রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধের সর্বোৎকৃষ্ট উপায় হলো ছাগল ও ভেড়াকে নিয়মিত টিকা / ভ্যাকসিন প্রদান করা। এছাড়াও আক্রান্ত পশুকে আলাদা করতে হবে।
ছাগলের খামার নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। খাবার পাত্র ও পানির পাত্র পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখতে হবে। খামারের বায়োসিকিউরিটি বা জৈব নিরাপত্তা সঠিক ভাবে মেনে চলতে হব।
ছাগলের পিপিআর রোগের টীকা
ছাগল খামারের সবচেয়ে মারাত্বক ও ক্ষতিকর রোগ হলো এটি। ছাগলকে প্রতি ৬ মাস অন্তর অন্তর এই রোগের টিকা প্রয়োগ করতে হয়।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনিস্টিটিউট (৪11) এই রোগের টিকা উৎপাদন করে। এরং উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে এই টিকার
সরবরাহ পাওয়াযায়।
ছাগলের পিপিআর রোগের ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম
ছয় মাস বয়সী ছাগল ও ভেড়াকে > সিসি ভ্যাকসিন চামড়ার নিচে প্রয়োগ করতে হবে। এতে ৬ মাস শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী হয়। ছাগলের পিপিআর রোগের চিকিৎসা সবসময় সফল হয়না। তাই টিকা দেওয়ার বিকল্প নেই।
আরো পড়ুনঃ
Leave a Reply