Your cart is currently empty!
গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর ১০ টি নিয়ম

আসুন গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর নিয়ম গুলো ভালোভাবে জানে নেই। গবাদিপশুর খাদ্য হিসাবে চিটাগুড়ের ব্যবহার আদিকাল থেকে হলেও বর্তমান সময়ে এর বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে যা গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি, মাছ ও অন্যান্য গবাদিপ্রাণীর খাদ্য ব্যবস্থাপণাকে সাশ্রয়ী ও উন্নত করেছে। এটি অত্যান্ত পুষ্টিকর ও উপকারি।
VitaMolas 600 GM বোতল। ভিটামোলাস (ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ চিটাগুড়)। ১ কার্টুন ২0 পিচ।
ভিটামোলাস VitaMolas (ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ চিটাগুড়) গরুর রুমেন মাইক্রোফ্লোরার সংখ্যা বৃদ্ধি করে এবং রুমেন এর PH বজায় রাখে, ফলে খাদ্য গ্রহণের পরিমান বৃদ্ধি পায়। এটি মাংস এবং দুধের উৎপাদনও বৃদ্ধি করে (প্রায় 12%) এবং অল্পবয়সী প্রাণীদের বৃদ্ধিকে বাড়িয়ে তোলে। MRP: 135.00 Tk
গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর নিয়মসমূহ
গরুকে বিভিন্ন উপায়ে চিটাগুড় খাওয়ানো যায়। যেমন সরাসরি, পানির সাথে মিশিয়ে, টিএমআর তৈরি বরে, সাইলেজ তৈরি করে, দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে, পিলেট খাদ্য তৈরিতে ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর নিয়ম গুলো সম্পর্কে পর্যায়ক্রমে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হলো। যা আপনার খাদ্য ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করবে।
১. সরাসরি
যেহেতু চিটাগুড়ে প্রচুর এনার্জি পাওয়া যায় সেহেতু এটি গরুকে সরাসরি খাওয়ানো যায়। একটি পাত্রে চিটাগুড় ঢেলে প্রাণির সামনে দিলেই প্রাণি তা চেটে খেয়ে নেবে। প্রথম প্রথম সরাসরি চিটাগুড় সরবরাহ করলে গরু তা নাও খেতে পারে কেননা আগে থেকে এটি খাওয়ার কোনো অভ্যাস তার নেই। সেক্ষেত্রে তাকে অল্প অল্প করে খায়িয়ে অভ্যাস করাতে হবে।

গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে গবাদিপশু যেন খুদার্থ অবস্থায় না থাকে। প্রাণির ওজন ও অন্যান্য কন্ডিশনের উপর নির্ভর করে প্রতিটি গরুকে ১০০ থেকে ৩০০ গ্রাম বা তারচেয়ে বেশি পরিমানে চিটাগুড় গরুকে খাওয়ানো যেতে পারে।
২. পানির সাথে
গরুর চাহিদা অনুযায়ী পানি নিয়ে তার সাথে চিটাগুড় ও লবন মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিতে হবে। এর পর গরুকে তা খেতে দিতে হবে। এটি খুবই সাধারণ একটি নিয়ম। যে সকল ছাগল বা গরু পানি খেতে পছন্দ করে না তাদের পানির সাথে পরিমান মত চিটাগুড় ও লবন মিশিয়ে খাওয়ালে পানি গ্রহণ বৃদ্ধি পায়।
গবাদিপশু অসুস্থ্য হলে বা গাভী গরুর বাছুর প্রশবের পর দূর্বল থাকে সে সময় পনির সাথে চিটাগুড় খাওয়ালে গরুর শরীরে দ্রুত শক্তি ফিরে আসে এবং গাভী গরুর ওলানে দ্রুত পর্যাপ্ত দুধ চলে আসে ও সারা বছর দুধের উৎপাদন ভালো থাকে। গরমের সময় গরুকে ঠান্ডা রাখতে লবন, চিটাগুড় ও পানি মিশিয়ে পান করানো হয়।
৩. খাদ্যের সাথে
গরুর প্রায় সব রকমের খাদ্যের সাথেই চিটাগুর মিশিয়ে খাওয়ানো যায়। শুকনো খর কিংবা খর ও ঘাসের মিশ্রণের সাথে পরিমান মত মিশিয়ে গরু বা ছাগল কে সরবরাহ করা হয়। খর কেটে তার সাথে পরিমান মত গমের ভুসি, চাউলের কুড়া ও চিটাগুড় মিশিয়ে সরবরাহ করা হয়। এতে খাবারের পুষ্টি ও স্বাদ দু-ই বৃদ্ধি পায়।
৪. খরের সাথে
ধানের খর গবাদিপশুর একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। এতে পুষ্টি খুব কম পরিমানে থাকলেও এতে ডাইজেস্টেবল ফাইবার প্রচুর পরিমানে থাকার কারণে বর্তমান সময়ে গবাদিপশুর খাদ্য হিসাবে এর বিকল্প নেই। খর বা বিছালির সাথে পরিমান মত চিটাগুড় মিশিয়ে খাওয়ানো হয়।

৫. ইউএমএস
ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র এর সংক্ষিপ্ত রুপ হলো ইউএমএস। আর্থাৎ খরের সাথে পরিমান মত চিটাগুড় ও ইউরিয়া মিশিয়ে ইউএমএস তৈরি করা হয়। গরু কে চিটাগুড় খাওয়ানোর সবচেয়ে জনপ্রীয় নিয়ম হলো এটি। ইউএমএস তৈরিতে সাধারণত ১০০ কেজি খরের জন্য ৩ কেজি চিটাগুড় ও ১ কেজি ইউরিয়া ব্যবহার করা হয়।
৬. সাইলেজ
আমরা সাইলেজ বলতে সাধারণত ভুট্টার সাইলেজ কে বুঝি। কিন্তু ভুট্টা ছাড়াও ধান, গম, শরগম, নেপিয়ার খাস, জাম্বু খাস, সুদান খাস ইত্যাদির সাইলেজ তৈরি করা যায়। ভুট্টা সহ সহল প্রকার সাইলেজ তৈরিতে চিটাগুড় ব্যবহার করা হয়। এতে সাইলেজের পুষ্টি ও ফার্মান্টেশনের পরিমান বৃদ্ধি পায়।
৭. টিএমআর
টোটাল মিক্সড রেশন এর সংক্ষিপ্ত রুপ হলো টিএমআর। অর্থাৎ গরুর খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা বিবেচনা করে খর, ঘাস, দানাদার খাদ্য, চিটাগুড়, ভিটামিন, মিনারেল ইত্যাদি মিশিয়ে টোটাল মিক্সড রেশন তৈরি করা হয়। আধুনিক ডেইরি খামার গুলোতে এই পদ্ধতিতে খাবার দেওয়া হয়।

৮. পিলেট ফিড
ফিড মিলে গবাদিপশুর জন্য ফিড তৈরি করার সময় ফিডের পুষ্টি, স্বাদ, গন্ধ ও গঠন উন্নত করতে চিটাগুড় প্রচুর পরিমানে ব্যবহার হয়। মোলাসেস ফিডে ব্যবহার করলে ফিডে মিনারেলের অভাব দুর হয়, গরুর খাদ্য গ্রহণ বৃদ্ধি পায়, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এটি পিলেট বাইন্ডার হিসাবে কাজ করে
৯. ইউরিয়া মোলাসেস মাল্টি নিউট্রিয়েন্ট ব্লক
ইউরিয়া মোলাসেস মাল্টি নিউট্রিয়েন্ট ব্লক এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ইউএমএমবি। গরুর ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পুরোনের সাশ্রয়ী একটি মাধ্যম। এক্ষেত্রে ইউরিয়া, চিটাগুড় বা মোলাসেস, ভিটামিন ও মিনারেল প্রিমিক্স, লবন, সিমেন্ট, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট ইত্যাদি পর্যায় ক্রমে মিশিয়ে তা থেকে ব্লক তৈরি করে গরুকে চেটে খাওয়ার জন্য দেয়া হয়।
১০. ফর্মান্টেড ফিড
গম, ভুট্টা, চাউল ইত্যাদি ফসলকে ফর্মেন্টেশন করে অন্য ফিড বা দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হয়। এই পদ্ধতিতে ভুট্টাকে প্রধমে গুড়া করে নেয়া হয়। এর পর একটি ড্রামে রেখে পরিমান মত পনি দিতে হয়। একটি পাত্রে কিছু পানি নেয়ে তাতে পরিমান মত ঈস্ট ও পরে কিছু পরিমানে চিটাগুড় যোগ করে ভালোভাবে মেশানো হয়।
পরবর্তিতে এই মিশ্রণটি ড্রামে রাখা ভুট্টার সাথে ভালো ভাবে মিশিয়ে ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা রেখে দিতে হবে। এরপর এই খাদ্যটি প্রাণি কে অন্য খাদ্যের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর সতর্কতা
গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর ক্ষেত্রে সাধারণ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। যেমন-
- গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর আগে আবশ্যই তাকে ভালো ভাবে কৃমিমুক্ত করণ করে নিতে হবে।
- ইউএমএস খাওয়নোর ক্ষেত্রে পশুর বয়স খেয়াল রাখতে হবে। ৬ মাসের কম বয়সি ছাগল বা ভেড়া ও ১ বছরের কম বয়সি গরু বা মহিষ কে ইউএমএস খাওয়ানো যাবে না।
- ইউএমএস অবশ্যই অন্যান্য খর বা ঘাসের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
- ফার্মান্টেড ফিড তৈরি করে তা অন্য দানাদার খাদ্যের সাথে ৪০ % হারে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
- খুধার্থ পশুতে অধিক পরিমানে খেতে দেওয়া যাবে না।
- রেশনে মাত্রার চেয়ে অধিক পরিমানে চিটাগুড় ব্যবহার করা যাবে না।
আলোচনার সারসংক্ষেপ
প্রীয় খামারি ভায়েরা, উপরের আলোচনায় নিশচয় গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর নিয়ম সম্পর্কে ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছেন। এটি দামে অনেক সস্তা। এর বাইরে আরো কেনো বিষয় আপনার জানা থাকলে বা জানানোর থাকলে আমাদের কমেন্টে তা জানাতে পারেন।
Leave a Reply